• সভা ও সমিতি : উনবিংশ শতকে মধ্যবিত্ত ভারতবাসী সরকারি অনাচারের বিরুদ্ধে জনমত গঠনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সভা ও সমিতি স্থাপন করে।
মহাবিদ্রোহের পূর্বের সভা ও সমিতি :
• বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা : 1836 খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে টাকির জমিদার কালিনাথ রায় চৌধুরী, দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর এবং অপরাপর রামমোহন শীর্ষদের উদ্যোগে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটাই বাঙালি তথা ভারতবাসী দের মধ্যে সর্ব প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
• জমিদার সভা : 1838 খ্রিষ্টাব্দের রাধাকান্ত দেব দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রসন্নকুমার ঠাকুরের উদ্যোগে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন রাধাকান্ত দেব।
• বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি : 1843 খ্রিস্টাব্দে জর্জ টমসন বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। জর্জ টমসন ও প্যারীচাঁদ মিত্র যথাক্রমে এই সভার সভাপতি ও সম্পাদক ছিলেন। পন্ডিত ভূদেব মুখোপাধ্যায় এই সভা কে ভারতবর্ষীয় সভা নাম দেন। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের অবস্থা ইংল্যান্ডে প্রচার এবং ভারতবাসীর জন্য রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার লাভ করাই ছিল এই সমিতির উদ্দেশ্য।
• ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন : 1851 খ্রীস্টাব্দে জমিদার সভা ও বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি একত্রিত হয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন -এ পরিণত হয়। রাধাকান্ত দেব এর প্রথম সভাপতি এবং দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রথম সম্পাদক ছিলেন। মাদ্রাজ ও অযোধ্যায় এই সমিতির শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বোম্বাই-এ অনুরূপ একটি স্বতন্ত্র সভা স্থাপিত হয়। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এর আদর্শে 1852 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে দাদাভাই নওরোজি উদ্যোগে ‘বোম্বাই অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠিত হয়।
মহাবিদ্রোহের পরবর্তী সভা ও সমিতি :
• ইন্ডিয়ান লিগ : 1875 খ্রিস্টাব্দে শিশির কুমার ঘোষ হেমন্ত কুমার ঘোষ ও কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্যোগে ইন্ডিয়ান লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
• ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন : 1876 খ্রিষ্টাব্দের 26 শে জুলাই আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্যোগে এক বিশাল জনসমাবেশে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন' বা ‘ভারত সভা’র প্রতিষ্ঠা হয়। সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন এই সভার প্রাণপুরুষ। দেশে শক্তিশালী জনমত গঠন, ভারতের বিভিন্ন জাতি ও মতাবলম্বী গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করা, হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যবোধ গঠন এবং জনসাধারণ কে গণ আন্দোলনে শামিল করা ছিল এই সমিতির আদর্শ।
• বাংলার বাইরে সভা ও সমিতি : 1869 খ্রিস্টাব্দে দাদাভাই নওরোজি লন্ডনে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠা করেন এবং 1871 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে এর একটি শাখা স্থাপিত করেন। 1867 খ্রিস্টাব্দে গোপাল হরি দেশমুখ এর উদ্যোগে ‘পুনা সার্বজনীক সভা' স্থাপিত হয়। 1885 খ্রিস্টাব্দে কাশীনাথ ত্রিম্বক তেলাং, ফিরোজ শাহ মেহতা ও বদরুদ্দিন তয়েবজির উদ্যোগে ‘বোম্বাই প্রেসিডেন্সি অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠিত হয়। 1884 খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে প্রতিষ্ঠিত হয় মহাজন' সভা।
• ইলবার্ট বিল : 1873 খ্রীষ্টাব্দে 'কোড অফ ক্রিমিনাল ল' বা 'ফৌজদারি আইন' পাস হয়। এই আইন অনুসারে ইউরোপীয় ম্যাজিস্ট্রেটরা ভারতীয়দের বিচারের ক্ষমতা লাভ করলেও, কোন ভারতীয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়রা জজ ইউরোপীয়দের বিচার করতে পারতেন না। 1883 খ্রিস্টাব্দে বড়লাট লর্ড রিপনের নির্দেশে তার বিখ্যাত আইনজ্ঞ স্যার সি.পি. ইলবার্ট এর নেতৃত্বে একটি কমিটি ভারতীয় ও ইউরোপীয় বিচারকদের মধ্যে কার বৈষম্য তুলে দিয়ে একটি সুপারিশ পত্র বিল আকারে আইনসভায় পাঠালে তা অনুমোদন লাভ করে। এটি 'ইলবার্ট বিল' নামে পরিচিত। ইলবার্ট বিল পাস হলে ইউরোপীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলের এই বিলে কিছু সংশোধন আনা হলে ভারতীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়রা যে আন্দোলন করেছিল তা ‘white mutiny' বা ‘শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ' নামে পরিচিত।
• সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন : ‘ভারত সভা’র উদ্যোগে এবং সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহন বসুর চেষ্টায় 1883 খ্রিস্টাব্দে 28 থেকে 30 শে ডিসেম্বর কলকাতার অ্যালবার্ট হলে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় শতাধিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন আয়োজিত হয়। রামতনু লাহিড়ী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলন ছিল ইলবার্ট বিল সম্পর্কে ইউরোপীয়দের আন্দোলনের বিরুদ্ধে শিক্ষিত ভারতবাসীর যোগ্য প্রত্যুত্তর।
মহাবিদ্রোহের পূর্বের সভা ও সমিতি :
• বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা : 1836 খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে টাকির জমিদার কালিনাথ রায় চৌধুরী, দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর এবং অপরাপর রামমোহন শীর্ষদের উদ্যোগে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটাই বাঙালি তথা ভারতবাসী দের মধ্যে সর্ব প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
• জমিদার সভা : 1838 খ্রিষ্টাব্দের রাধাকান্ত দেব দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রসন্নকুমার ঠাকুরের উদ্যোগে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন রাধাকান্ত দেব।
• বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি : 1843 খ্রিস্টাব্দে জর্জ টমসন বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। জর্জ টমসন ও প্যারীচাঁদ মিত্র যথাক্রমে এই সভার সভাপতি ও সম্পাদক ছিলেন। পন্ডিত ভূদেব মুখোপাধ্যায় এই সভা কে ভারতবর্ষীয় সভা নাম দেন। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের অবস্থা ইংল্যান্ডে প্রচার এবং ভারতবাসীর জন্য রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার লাভ করাই ছিল এই সমিতির উদ্দেশ্য।
• ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন : 1851 খ্রীস্টাব্দে জমিদার সভা ও বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি একত্রিত হয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন -এ পরিণত হয়। রাধাকান্ত দেব এর প্রথম সভাপতি এবং দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রথম সম্পাদক ছিলেন। মাদ্রাজ ও অযোধ্যায় এই সমিতির শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বোম্বাই-এ অনুরূপ একটি স্বতন্ত্র সভা স্থাপিত হয়। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এর আদর্শে 1852 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে দাদাভাই নওরোজি উদ্যোগে ‘বোম্বাই অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠিত হয়।
মহাবিদ্রোহের পরবর্তী সভা ও সমিতি :
• ইন্ডিয়ান লিগ : 1875 খ্রিস্টাব্দে শিশির কুমার ঘোষ হেমন্ত কুমার ঘোষ ও কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্যোগে ইন্ডিয়ান লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
• ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন : 1876 খ্রিষ্টাব্দের 26 শে জুলাই আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্যোগে এক বিশাল জনসমাবেশে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন' বা ‘ভারত সভা’র প্রতিষ্ঠা হয়। সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন এই সভার প্রাণপুরুষ। দেশে শক্তিশালী জনমত গঠন, ভারতের বিভিন্ন জাতি ও মতাবলম্বী গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করা, হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যবোধ গঠন এবং জনসাধারণ কে গণ আন্দোলনে শামিল করা ছিল এই সমিতির আদর্শ।
• বাংলার বাইরে সভা ও সমিতি : 1869 খ্রিস্টাব্দে দাদাভাই নওরোজি লন্ডনে ‘ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠা করেন এবং 1871 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ে এর একটি শাখা স্থাপিত করেন। 1867 খ্রিস্টাব্দে গোপাল হরি দেশমুখ এর উদ্যোগে ‘পুনা সার্বজনীক সভা' স্থাপিত হয়। 1885 খ্রিস্টাব্দে কাশীনাথ ত্রিম্বক তেলাং, ফিরোজ শাহ মেহতা ও বদরুদ্দিন তয়েবজির উদ্যোগে ‘বোম্বাই প্রেসিডেন্সি অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠিত হয়। 1884 খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে প্রতিষ্ঠিত হয় মহাজন' সভা।
• ইলবার্ট বিল : 1873 খ্রীষ্টাব্দে 'কোড অফ ক্রিমিনাল ল' বা 'ফৌজদারি আইন' পাস হয়। এই আইন অনুসারে ইউরোপীয় ম্যাজিস্ট্রেটরা ভারতীয়দের বিচারের ক্ষমতা লাভ করলেও, কোন ভারতীয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়রা জজ ইউরোপীয়দের বিচার করতে পারতেন না। 1883 খ্রিস্টাব্দে বড়লাট লর্ড রিপনের নির্দেশে তার বিখ্যাত আইনজ্ঞ স্যার সি.পি. ইলবার্ট এর নেতৃত্বে একটি কমিটি ভারতীয় ও ইউরোপীয় বিচারকদের মধ্যে কার বৈষম্য তুলে দিয়ে একটি সুপারিশ পত্র বিল আকারে আইনসভায় পাঠালে তা অনুমোদন লাভ করে। এটি 'ইলবার্ট বিল' নামে পরিচিত। ইলবার্ট বিল পাস হলে ইউরোপীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলের এই বিলে কিছু সংশোধন আনা হলে ভারতীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়রা যে আন্দোলন করেছিল তা ‘white mutiny' বা ‘শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ' নামে পরিচিত।
• সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন : ‘ভারত সভা’র উদ্যোগে এবং সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহন বসুর চেষ্টায় 1883 খ্রিস্টাব্দে 28 থেকে 30 শে ডিসেম্বর কলকাতার অ্যালবার্ট হলে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় শতাধিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন আয়োজিত হয়। রামতনু লাহিড়ী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলন ছিল ইলবার্ট বিল সম্পর্কে ইউরোপীয়দের আন্দোলনের বিরুদ্ধে শিক্ষিত ভারতবাসীর যোগ্য প্রত্যুত্তর।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.