•প্রাগৈতিহাসিক যুগ : 2,60,000 থেকে 10,200 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ভারতে ‘পুরা প্রস্তর যুগ' স্থায়ী হয়। মোটামুটি 50,000 খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভারতে নেগ্রিটো জাতির বসবাস শুরু হয়। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। 10,000 থেকে 5000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ হল মধ্য প্রস্তর যুগের স্থায়িত্বকাল। ভারতবর্ষে নব্য প্রস্তর যুগের স্থিতিকাল 5000 থেকে 4000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত। 3200 থেকে 2750 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে তাম্র প্রস্তর যুগ (‘chalcolithic age') বলা হয়। এই তাম্র প্রস্তর যুগেই সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ঘটে। 1500 থেকে 1100 খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে লোহার আবিষ্কার হয়েছিল। ভারতে তাম্র-ব্রঞ্জ যুগের শেষের দিকে আনুমানিক 1000 খ্রিস্টপূর্বাব্দে ‘লৌহ যুগের' সূচনা হয়।
•মেহেরগড় সভ্যতা : ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হল মেহেরগড় সভ্যতা। 1974 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিক জেন ফ্রাঁসোয়া জারিজ ও মার্কিন প্রত্নতাত্ত্বিক রিচার্ড মিডৌ বেলুচিস্তানের কাচ্চি সমভূমিতে মেহেরগড় সভ্যতা আবিষ্কার করেন। বেলুচিস্তানের ঝোব নদী থেকে পশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদী পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে মেহেরগড় সভ্যতা গড়ে ওঠে এই সভ্যতার মূল কেন্দ্র গুলি হল কিলে গুল মহম্মদ, রানা ঘুনডাই, গুমলা, আনজিরা, মুন্ডিগাক ও মেহেরগড়। রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে জানা গেছে 7000 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে 5000 খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে মোট সাতটি পর্যায়ে এই সভ্যতার বিস্তার ঘটে।
•হরপ্পা সভ্যতা : 1921 খ্রিস্টাব্দে আর বি দয়ারাম সাহানি পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলায় খননকার্য চালিয়ে প্রথম হরপ্পা আবিষ্কার করেন। 1922 খ্রিস্টাব্দে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায় খননকার্য চালিয়ে মহেঞ্জোদারো আবিষ্কার করেন। রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে জানা যায় হরপ্পা সভ্যতা 2500 থেকে 1750 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। পাকিস্তানে অবস্থিত হরপ্পা সভ্যতার প্রধান কেন্দ্র গুলি হল হরপ্পা (ইরাবতী বা রাভি), মহেঞ্জোদারো (সিন্ধু), চানহুদারো (সিন্ধু) ইত্যাদি এবং ভারতে অবস্থিত প্রধান কেন্দ্র গুলি হল লোথাল, রংপুর, সুরকোড্ডা, কালিবঙ্গান, বনওয়ালি এবং আলমগীরপুর ইত্যাদি। ভারতে অবস্থিত বৃহত্তম এবং সর্বশেষ আবিষ্কৃত কেন্দ্রটি হলো গুজরাটের ধোলাবীরা। ডঃ জে পি যোশি এবং ডঃ আর এস বিস্ত এটির খননকার্য করেন।
•সিন্ধু সভ্যতা একটি নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা পোড়ামাটির ইট ব্যবহার করত। রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের ব্যবস্থা ছিল। ঘর গুলি ছিল দুই বা তার বেশি তলার। পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা ছিল। মহেঞ্জোদারোতে একটি বৃহৎ স্নানাগার এর নিদর্শন পাওয়া গেছে। স্নানাগারের আয়তন 180×108 ফুট এবং 8 ফুট গভীর। হরপ্পাতে একটি শস্য ভান্ডার পাওয়া গেছে, যার আয়তন 169×135 ফুট। হরপ্পা সভ্যতার লোকেরা গম, বার্লি, রাই, ডাল, তিল, সর্ষে, ধান, তুলো, খেজুর, তরমুজ ইত্যাদি চাষ করতো। এই সভ্যতার পুরুষ ও মহিলা উভয়ই গয়না ব্যবহার করত। তারা সোনা, রূপা, তামা এবং হাতির দাঁত দিয়ে গয়না বানাত। মহেঞ্জোদারোতে ব্রোঞ্জের তৈরি একটি নর্তকীর মূর্তি পাওয়া গেছে। এই সভ্যতার লোকেরা বিনিময় প্রথার মাধ্যমে ব্যবসা করত। 16 ছিল পরিমাপের একক। তারা উত্তর কর্ণাটক থেকে সোনা, আফগানিস্তান ও ইরান থেকে রুপো এবং নীলকান্তমণি (lapis lazuli), রাজস্থানের ক্ষেত্রী ও বালুচিস্তান থেকে তামা আমদানি করত। সুমার ও মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। লোথালে একটি বন্দর আবিষ্কৃত হয়েছে। এই সভ্যতার লোকেরা মৃত ব্যক্তিকে উত্তর-দক্ষিণে রাখত। এই সভ্যতায় ব্যবহৃত লিপি হল চিত্র লিপি, যার পাঠোদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। তারা প্রথম লাইন ডান দিক থেকে বাঁদিকে লিখতো এবং দ্বিতীয় লাইনটি বাঁদিক থেকে ডান দিকে লিখতো এই পদ্ধতির লেখাকে ‘Boustrophedon' বলে। তারা ঘোড়া ও লোহার ব্যবহার জানত না। সিন্ধুর মানুষরা সূর্য পূজার প্রতীক রূপে ‘স্বস্তিকা চিহ্ন' ব্যবহার করত।
•সিন্ধু সভ্যতা একটি নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীরা পোড়ামাটির ইট ব্যবহার করত। রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের ব্যবস্থা ছিল। ঘর গুলি ছিল দুই বা তার বেশি তলার। পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থা ছিল। মহেঞ্জোদারোতে একটি বৃহৎ স্নানাগার এর নিদর্শন পাওয়া গেছে। স্নানাগারের আয়তন 180×108 ফুট এবং 8 ফুট গভীর। হরপ্পাতে একটি শস্য ভান্ডার পাওয়া গেছে, যার আয়তন 169×135 ফুট। হরপ্পা সভ্যতার লোকেরা গম, বার্লি, রাই, ডাল, তিল, সর্ষে, ধান, তুলো, খেজুর, তরমুজ ইত্যাদি চাষ করতো। এই সভ্যতার পুরুষ ও মহিলা উভয়ই গয়না ব্যবহার করত। তারা সোনা, রূপা, তামা এবং হাতির দাঁত দিয়ে গয়না বানাত। মহেঞ্জোদারোতে ব্রোঞ্জের তৈরি একটি নর্তকীর মূর্তি পাওয়া গেছে। এই সভ্যতার লোকেরা বিনিময় প্রথার মাধ্যমে ব্যবসা করত। 16 ছিল পরিমাপের একক। তারা উত্তর কর্ণাটক থেকে সোনা, আফগানিস্তান ও ইরান থেকে রুপো এবং নীলকান্তমণি (lapis lazuli), রাজস্থানের ক্ষেত্রী ও বালুচিস্তান থেকে তামা আমদানি করত। সুমার ও মেসোপটেমিয়ার সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। লোথালে একটি বন্দর আবিষ্কৃত হয়েছে। এই সভ্যতার লোকেরা মৃত ব্যক্তিকে উত্তর-দক্ষিণে রাখত। এই সভ্যতায় ব্যবহৃত লিপি হল চিত্র লিপি, যার পাঠোদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। তারা প্রথম লাইন ডান দিক থেকে বাঁদিকে লিখতো এবং দ্বিতীয় লাইনটি বাঁদিক থেকে ডান দিকে লিখতো এই পদ্ধতির লেখাকে ‘Boustrophedon' বলে। তারা ঘোড়া ও লোহার ব্যবহার জানত না। সিন্ধুর মানুষরা সূর্য পূজার প্রতীক রূপে ‘স্বস্তিকা চিহ্ন' ব্যবহার করত।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.