•ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু ও মৃত্তিকার বিভেদ অনুসারে চ্যাম্পিয়ন ও পুরি ভারতের বনভূমি কে 5টি প্রধান এবং 16 টি অপ্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন।
•ভারতের মোট আয়তনের শতকরা 21.02 ভাগ স্থানে বনভূমি আছে।
•পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের পাদদেশ থেকে 1000 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত শিশু, চাপলাস, মেহগনি, গর্জন প্রভৃতি শক্ত কাঠের চিরহরিৎ বনভূমি দেখা যায়।
•পূর্ব হিমালয়ের 1000 মিটার থেকে 2500 মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের 500 মিটার থেকে 2000 মিটার উচ্চতায় পপলার, ওক, ম্যাপল, ওয়ালনাট, বার্চ প্রভৃতি পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায়।
•পূর্ব হিমালয়ের 2500 মিটার থেকে 4000 মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের 2000 মিটার থেকে 3500 মিটার উচ্চতায় পাইন, পার, দেবদারু, সিডার, স্প্রুস, এলস প্রভৃতি নরম কাঠের সরলবর্গীয় বনভূমি দেখা যায় ।
•পশ্চিম হিমালয়ের সরলবর্গীয় বনভূমি অঞ্চলের আরো উপরে প্রায় 4500 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জুনিপার, রডোডেনড্রন, লার্চ, ভুর্জ প্রভৃতি নানা রকমের তৃণ ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের আল্পীয় বনভূমি দেখা যায়।
•ভারতের যে সমস্ত অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত 200 সেন্টিমিটার এর বেশি সেখানে চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। শিশু, গর্জন, রোজউড, মেহগনি, চাপলাস, বোগানোমা, নাহার, লোহাকাঠ, রাবার, বাঁশ, আবলুস প্রভৃতি এই বনভূমির প্রধান উদ্ভিদ। পশ্চিমঘাট ও পূর্বঘাট পর্বতমালা, পূর্বাচল, অরুণাচল, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশার বৃষ্টিবহুল অংশে এই বনভূমি দেখা যায়।
•ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত 100 সেন্টিমিটার থেকে 200 সেন্টিমিটার সেখানে পর্ণমোচী বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। শাল, শিমুল, সেগুন, জারুল, মহুয়া, পলাশ, শিরীষ, বট, অশ্বত্থ, কুসুম, আম, কাঁঠাল প্রভৃতি হল পর্ণমোচী বৃক্ষের উদাহরণ। উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমঘাট পর্বতমালা প্রভৃতি অঞ্চলে এই ধরনের বনভূমি দেখা যায়।
•ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত 50 থেকে 100 সেন্টিমিটার সেখানে সাবাই, কাশ্মীর, মুঞ্জ প্রভৃতি ঘাস ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ দেখা যায়। আরাবল্লী পূর্বাংশ, গুজরাট, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে এই বনভূমি দেখা যায়।
•ভারতের যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত 50 সেন্টিমিটার এর কম এবং উত্তাপ খুব বেশি সেখানে বাবলা, ফনিমনসা, তেশিরা প্রভৃতি ক্যাকটাস বা কাটা জাতীয় মরু উদ্ভিদ এবং অপেক্ষাকৃত আর্দ্র অঞ্চলে বুনো খেজুর, তাল, বেরি প্রভৃতি উদ্ভিদ জন্মায়।
•মরু অঞ্চলের কাটা যুক্ত উদ্ভিদ কে জেরোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ বলা হয়।
•পডসল মৃত্তিকায় সরলবর্গীয় উদ্ভিদ জন্মায়।
•নদীর বদ্বীপ অঞ্চল ও অন্যান্য নিচু স্থান যেখানে সাগরের লোনাজল প্রবেশ করে সেখানে ম্যানগ্রোভ বনভূমি দেখা যায়। সুন্দরী, গরান, গেঁও, ক্যাওড়া, হোগলা, গোলপাতা প্রভৃতি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উদ্ভিদ। গঙ্গা, মহানদী, গোদাবরি, কৃষ্ণা প্রভৃতি নদীর বদ্বীপ অঞ্চল, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নিম্ন উপকূল ভাগ এবং কাম্বে উপসাগরের নিম্ন জলাভূমি অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বনভূমি দেখা যায়।
•ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গাছগুলিতে ঠেসমূল এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
•সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে সুন্দরবন নামকরণ হয়েছে।
•লাক্ষা থেকে গালা উৎপন্ন হয়।
•তুঁত গাছের রেশম কীট পালন করা হয়।
•মধ্যপ্রদেশে বনভূমির পরিমাণ সর্বাধিক।
•ভারতের অরণ্য গবেষণাগার টি উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে অবস্থিত।
•বনভূমি সংরক্ষণের জন্য 1980 সালে ভারত সরকার "বন সংরক্ষণ আইন" প্রণয়ন করে।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.