• জালালউদ্দিন খলজি : দিল্লির দাস বংশের শেষ তুর্কি সুলতান কায়কোবাদ এবং তার শিশুপুত্র কাইমুর্সকে হত্যা করে 1290 খ্রিস্টাব্দে জালালউদ্দিন খলজি দিল্লির সিংহাসনে বসেন এবং খলজি বংশের প্রতিষ্ঠা করেন । এই ঘটনা ইতিহাসে খলজি বিপ্লব নামে পরিচিত।
• আলাউদ্দিন খলজী : 1296 খ্রিস্টাব্দে জালালউদ্দিন খলজির ভাতুষ্পুত্র ও জামাতা আলাউদ্দিন খলজী তাকে হত্যা করে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তিনি ‘সিকন্দর-ই-সানি’ বা ‘দ্বিতীয় আলেকজান্ডার' উপাধি ধারণ করেছিলেন। সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি প্রথম গুজরাট রাজ্য আক্রমণ করেন। গুজরাটের রাজা কর্ণ দেব কে পরাজিত করেন । তাঁর পত্নী রাণী কমলা দেবী কে বিবাহ করেন এবং মালিক কাফুর নামে এক দাস কে বন্দি করে দিল্লি তে নিয়ে আসেন। এই মালিক কাফুরই পরে আলাউদ্দিনের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপতি পদে উন্নীত হন। এরপর তিনি রণথম্বোর জয় করেন এবং পরে মেবারের রাজধানী চিতোর আক্রমণ করেন। চিতরের রানা রতন সিংহ পরাজিত হন এবং তার পত্নী পদ্মিনী ‘জহর ব্রত' পালন করে অগ্নিতে আত্মবিসর্জন দেন। উত্তর ভারত জয়ের পর আলাউদ্দিন খলজি মালিক কাফুর কে দক্ষিণ ভারত জয়ের জন্য পাঠান। তিনি একে একে দাক্ষিণাত্যের দেবগিরি রাজ্যের যাদব বংশীয় রাজা রামচন্দ্র, বরঙ্গল-এর কাকতীয় বংশীয় রাজা প্রতাপ রুদ্র, দ্বারসমুদ্র-এর হয়েসল বংশীয় রাজা তৃতীয় বীর বল্লাল এবং পান্ড্য রাজ্য জয় করেন। জালালউদ্দিন খলজির হাতে বন্দি হয়ে যেসব মোঙ্গল দিল্লির উপকণ্ঠে বসবাস শুরু করে তারা নব-মুসলমান নামে পরিচিত ছিল। এই নব-মুসলমানরা বিদ্রোহী হয়ে উঠলে আলাউদ্দিনের নির্দেশে 30 হাজার নব মুসলমানের শিরশ্ছেদ করা হয়। খাজা খাতির ছিলেন আলাউদ্দিনের উজির বা প্রধানমন্ত্রী। জায়গীর এর পরিবর্তে নগদ অর্থে বেতন দিতেন। সামরিক বিভাগের দুর্নীতি বন্ধ করতে দাগ ( অশ্ব চিহ্নিতকরণ ) ও হুলিয়া ( সৈন্য চিহ্নিতকরণ ) প্রথা চালু করেন। তিনিই প্রথম দিল্লিতে স্থায়ী ও সংরক্ষিত সেনা দল গঠন করেন। কাজি-উল-মুমালিক ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান। সরকারি খবর আদান প্রদানের জন্য তিনি দাভা বা পাইক এবং আউলাখ বা অশ্বারোহী ডাকের প্রচলন করেছিলেন। তিনি রাজস্ব বিভাগে ‘দেওয়ান-ই-আশরফ' বা হিসাবরক্ষক নিয়োগ করেছিলেন। বাজার তত্ত্বাবধানের জন্য শাহানা-ই-মান্ডি নামে দপ্তর গঠন করেন। পূর্ববর্তী ইক্তা প্রথা তুলে দিয়ে সমস্ত কৃষিযোগ্য জমিকে খলিশা বা খাস বা সরকারের নিজস্ব জমিতে পরিণত করেন। দিল্লির মুসলিম শাসকদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম জমি জরিপ করার রীতি প্রবর্তন করেন। তিনি সর্বপ্রথম রেশন ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আলাউদ্দিন নিজে নিরক্ষর ছিলেন কিন্ত শিক্ষা এবং শিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। আমির খসরু এবং মীর হাসান ডেহলভি তার পৃষ্ঠপোষকতা অর্জন করেছিলেন। আলাউদ্দিন দিল্লির সন্নিকটে সিরি নামক শহরটি নির্মাণ করেন। দিল্লির বিখ্যাত ‘আলাই দারওয়াজা' তার অন্যতম কীর্তি। কুতুব মিনারের প্রবেশদ্বারটি তিনি নির্মাণ করেন। তিনি হিন্দুদের ওপর জিজিয়া কর এবং মুসলিমদের উপর খামস্ ও জাকাৎ আরোপ করেছিলেন। 1316 খ্রিস্টাব্দে আলাউদ্দিন খলজির মৃত্যু হয়। আমির খসরু তার সম্বন্ধে বলেছেন “সম্রাটের রাজমুকুটের প্রতিটি মুক্তা, দরিদ্র কৃষকের অশ্রু ক্ষরিত জমাট রক্ত বিন্দুমাত্র।”
• আলাউদ্দিন খলজী : 1296 খ্রিস্টাব্দে জালালউদ্দিন খলজির ভাতুষ্পুত্র ও জামাতা আলাউদ্দিন খলজী তাকে হত্যা করে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তিনি ‘সিকন্দর-ই-সানি’ বা ‘দ্বিতীয় আলেকজান্ডার' উপাধি ধারণ করেছিলেন। সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি প্রথম গুজরাট রাজ্য আক্রমণ করেন। গুজরাটের রাজা কর্ণ দেব কে পরাজিত করেন । তাঁর পত্নী রাণী কমলা দেবী কে বিবাহ করেন এবং মালিক কাফুর নামে এক দাস কে বন্দি করে দিল্লি তে নিয়ে আসেন। এই মালিক কাফুরই পরে আলাউদ্দিনের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপতি পদে উন্নীত হন। এরপর তিনি রণথম্বোর জয় করেন এবং পরে মেবারের রাজধানী চিতোর আক্রমণ করেন। চিতরের রানা রতন সিংহ পরাজিত হন এবং তার পত্নী পদ্মিনী ‘জহর ব্রত' পালন করে অগ্নিতে আত্মবিসর্জন দেন। উত্তর ভারত জয়ের পর আলাউদ্দিন খলজি মালিক কাফুর কে দক্ষিণ ভারত জয়ের জন্য পাঠান। তিনি একে একে দাক্ষিণাত্যের দেবগিরি রাজ্যের যাদব বংশীয় রাজা রামচন্দ্র, বরঙ্গল-এর কাকতীয় বংশীয় রাজা প্রতাপ রুদ্র, দ্বারসমুদ্র-এর হয়েসল বংশীয় রাজা তৃতীয় বীর বল্লাল এবং পান্ড্য রাজ্য জয় করেন। জালালউদ্দিন খলজির হাতে বন্দি হয়ে যেসব মোঙ্গল দিল্লির উপকণ্ঠে বসবাস শুরু করে তারা নব-মুসলমান নামে পরিচিত ছিল। এই নব-মুসলমানরা বিদ্রোহী হয়ে উঠলে আলাউদ্দিনের নির্দেশে 30 হাজার নব মুসলমানের শিরশ্ছেদ করা হয়। খাজা খাতির ছিলেন আলাউদ্দিনের উজির বা প্রধানমন্ত্রী। জায়গীর এর পরিবর্তে নগদ অর্থে বেতন দিতেন। সামরিক বিভাগের দুর্নীতি বন্ধ করতে দাগ ( অশ্ব চিহ্নিতকরণ ) ও হুলিয়া ( সৈন্য চিহ্নিতকরণ ) প্রথা চালু করেন। তিনিই প্রথম দিল্লিতে স্থায়ী ও সংরক্ষিত সেনা দল গঠন করেন। কাজি-উল-মুমালিক ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান। সরকারি খবর আদান প্রদানের জন্য তিনি দাভা বা পাইক এবং আউলাখ বা অশ্বারোহী ডাকের প্রচলন করেছিলেন। তিনি রাজস্ব বিভাগে ‘দেওয়ান-ই-আশরফ' বা হিসাবরক্ষক নিয়োগ করেছিলেন। বাজার তত্ত্বাবধানের জন্য শাহানা-ই-মান্ডি নামে দপ্তর গঠন করেন। পূর্ববর্তী ইক্তা প্রথা তুলে দিয়ে সমস্ত কৃষিযোগ্য জমিকে খলিশা বা খাস বা সরকারের নিজস্ব জমিতে পরিণত করেন। দিল্লির মুসলিম শাসকদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম জমি জরিপ করার রীতি প্রবর্তন করেন। তিনি সর্বপ্রথম রেশন ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আলাউদ্দিন নিজে নিরক্ষর ছিলেন কিন্ত শিক্ষা এবং শিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। আমির খসরু এবং মীর হাসান ডেহলভি তার পৃষ্ঠপোষকতা অর্জন করেছিলেন। আলাউদ্দিন দিল্লির সন্নিকটে সিরি নামক শহরটি নির্মাণ করেন। দিল্লির বিখ্যাত ‘আলাই দারওয়াজা' তার অন্যতম কীর্তি। কুতুব মিনারের প্রবেশদ্বারটি তিনি নির্মাণ করেন। তিনি হিন্দুদের ওপর জিজিয়া কর এবং মুসলিমদের উপর খামস্ ও জাকাৎ আরোপ করেছিলেন। 1316 খ্রিস্টাব্দে আলাউদ্দিন খলজির মৃত্যু হয়। আমির খসরু তার সম্বন্ধে বলেছেন “সম্রাটের রাজমুকুটের প্রতিটি মুক্তা, দরিদ্র কৃষকের অশ্রু ক্ষরিত জমাট রক্ত বিন্দুমাত্র।”
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.