(1773 খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্ট অনুসারে নিযুক্ত)
•ওয়ারেন হেস্টিংস ----- 1774-1775 খ্রিস্টাব্দ
•স্যার জন ম্যাকফারসন ----- 1785-1786 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড কর্নওয়ালিস ----- 1786-1793 খ্রিষ্টাব্দ
•স্যার জন শোর ----- 1793-1798 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড ওয়েলেসলি ----- 1798-1805 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড কর্নওয়ালিস (দ্বিতীয়বার) ----- 1805 খ্রিস্টাব্দ
•স্যার জর্জ বার্লো ----- 1805-1807 খ্রিস্টাব্দ
•আর্ল-অব-মিন্টো (প্রথম) ----- 1807-1813 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড হেস্টিংস ----- 1813-1823 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড আমহার্স্ট ----- 1823-1828 খ্রিস্টাব্দ
•স্যার জন ম্যাকফারসন ----- 1785-1786 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড কর্নওয়ালিস ----- 1786-1793 খ্রিষ্টাব্দ
•স্যার জন শোর ----- 1793-1798 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড ওয়েলেসলি ----- 1798-1805 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড কর্নওয়ালিস (দ্বিতীয়বার) ----- 1805 খ্রিস্টাব্দ
•স্যার জর্জ বার্লো ----- 1805-1807 খ্রিস্টাব্দ
•আর্ল-অব-মিন্টো (প্রথম) ----- 1807-1813 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড হেস্টিংস ----- 1813-1823 খ্রিস্টাব্দ
•লর্ড আমহার্স্ট ----- 1823-1828 খ্রিস্টাব্দ
•প্রেসিডেন্সি : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সমস্ত বাণিজ্যকুঠি বা কেন্দ্রগুলি পরিচালিত হতো তিনটি কেন্দ্র থেকে – কলকাতা, বোম্বাই এবং মাদ্রাজ। এই কেন্দ্র গুলিকে প্রেসিডেন্সি বলা হত। তিনটি প্রেসিডেন্সিতে ‘স্থানীয় সভা' নিজ নিজ শাসনকার্য পরিচালনা করতো।
•রেগুলেটিং অ্যাক্ট : 1773 খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস এর শাসনকালে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লর্ড নর্থ এর উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট রেগুলেটিং অ্যাক্ট নামে এক আইন পাস করে। এই আইন অনুসারে কোম্পানির ভারতীয় সাম্রাজ্যের প্রশাসনের দায়িত্ব একজন গভর্নর জেনারেল ও চারজন সদস্য বিশিষ্ট একটি শাসন পরিষদ এর উপর ন্যস্ত হয়। বাংলার গভর্নর এই শাসন পরিষদের প্রধান হন এবং তিনি গভর্নর জেনারেল পদে উন্নীত হন। বোম্বাই ও মাদ্রাজের স্থানীয় সভা কে টিকিয়ে রাখা হয়, যদিও যুদ্ধ ঘোষণা ও সন্ধি স্থাপনের ক্ষেত্রে তাদের গভর্নর জেনারেল ও তার শাসন পরিষদ এর মতামত নিতে হতো। কেবলমাত্র বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে মতামত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।
•পিটের ভারত শাসন আইন : বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস এর শাসন পরিষদের সদস্যরা তার সকল কাজে বাধা সৃষ্টি করতেন। বোম্বাই এবং মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির স্থানীয় সভা ‘আশু প্রয়োজন' এর অজুহাতে গভর্নর জেনারেলের নির্দেশ অমান্য করতেন। এই অসুবিধাগুলি দূর করার জন্য ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছোট পিট 1784 খ্রিস্টাব্দে একটি নতুন আইন প্রবর্তন করেন, যা ‘পিটের ভারত আইন’ বা ‘pitt’s India Act' নামে পরিচিত। এই আইন অনুসারে গভর্নর-জেনারেল পরিষদের সদস্য সংখ্যা 4 থেকে কমিয়ে তিনজন করা হয়। প্রয়োজনে গভর্নর-জেনারেল পরিষদের মতামতকে অগ্রাহ্য করার অধিকার পান এবং বোম্বাই ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ওপর তার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপিত হয়।
•ওয়ারেন হেস্টিংস : বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য ‘কালেক্টর’ নামে বিশেষ কর্মচারী নিয়োগ এবং রাজস্বের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ‘বোর্ড অফ রেভিনিউ' গঠন করেন। 1772 খ্রিস্টাব্দে ‘দ্বৈত শাসন'-এর বিলোপ ঘটিয়ে ‘ইজারাদারি ব্যবস্থা' বা ‘পাঁচশালা বন্দোবস্ত'-এর প্রবর্তন করেন। 1776 খ্রিস্টাব্দে জমি জরিপের জন্য আমিনী কমিশন নিয়োগ করেন। পাঁচশালা বন্দোবস্ত-এ নানা অসুবিধা দেখা দিলে 1777 খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘একসালা বন্দোবস্ত'-এর প্রবর্তন করেন। প্রতিটি জেলায় তিনি একটি করে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আদালত গঠন করেছিলেন। কলকাতায় দুটি আপিল আদালত নির্মাণ করেন - সদর দেওয়ানী আদালত এবং সদর নিজামত আদালত। হিন্দু এবং মুসলিমদের জন্য আলাদা আলাদা আইন সংকলন করেন। তিনি সর্বপ্রথম সুসংগঠিত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করেছিলেন। তার সময় 1774 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সুপ্রিমকোর্ট গঠিত হয় রেগুলেটিং অ্যাক্ট এর ধারা অনুসারে। সুপ্রিম কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি স্যার এলিজা ইম্পে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে 1775 খ্রিস্টাব্দে মহারাজা নন্দকুমার কে ফাঁসির আদেশ দেন যা ‘জুডিশিয়াল মার্ডার' নামে খ্যাত। 1784 খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম জোন্স এর সঙ্গে বাংলায় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠিত করেন। চার্লস উইলকিনস প্রথম গীতার ইংরেজি অনুবাদ করেন এবং ওয়ারেন হেস্টিংস তার ভূমিকা লেখেন। তার সময় রহিল যুদ্ধ (1774), প্রথম ঈঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ (1776-82) এবং দ্বিতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ (1780-84) সংঘটিত হয়।
•লর্ড কর্নওয়ালিস : 1786 খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিস ভারতের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন। তিনি প্রথম আইনের সংস্কার করেন, রাজস্ব বিভাগ কে বিচার বিভাগ থেকে পৃথক করেন। 1793 খ্রিস্টাব্দে সনদ আইন পাস হয় এই আইনে গভর্নর জেনারেল এর ক্ষমতা ও অন্যান্য দুটি প্রেসিডেন্সির উপর তার নিয়ন্ত্রণ আরো বৃদ্ধি পায়। 1790 খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘দশশালা বন্দোবস্ত’-এর প্রবর্তন করেন। 1793 খ্রিস্টাব্দে ‘দশশালা বন্দোবস্ত' কে তিনি ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত'-এ পরিণত করেন। বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। তাকে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের জনক বলা হয়।
•লর্ড ওয়েলেসলি : ভারতে ইংরেজ অধিপত্য সুদৃঢ় করা এবং দেশীয় রাজন্যবর্গ কে সম্পূর্ণ ভাবে কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল করে তোলার উদ্দেশ্যে গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি 1798 খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির প্রবর্তক করেন। হায়দ্রাবাদের নিজাম সর্বপ্রথম অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি স্বাক্ষর করেন। 1801 খ্রিস্টাব্দে অযোধ্যা, 1802 খ্রিস্টাব্দে পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও (বেসিনের সন্ধি দ্বারা), 1803 খ্রিস্টাব্দে সিন্ধিয়া ও ভোঁসলে, 1818 খ্রিস্টাব্দে হোলকার এই চুক্তি মেনে নেন। এরপর একে একে মালব, বুন্দেলখন্ড, উদয়পুর, যোধপুর এবং জয়পুর এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। ওয়েলেসলি চতুর্থ ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধের দ্বারা টিপু সুলতানের সাম্রাজ্য সরাসরি দখল করেন। ছলনার মাধ্যমে তিনি তাঞ্জোর, সুরাট ও কর্নাটক বা আর্কট রাজ্য দখল করেন। ওয়েলেসলি কোম্পানির সিভিলিয়ানদের ভারতীয় ভাষা, রীতি নীতি বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য 1800 খ্রিস্টাব্দের 24 শে নভেম্বর কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ তৈরি করেন।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.