• ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধ (1814-1816 খ্রিস্টাব্দ) : 1768 খ্রিস্টাব্দে দুর্ধর্ষ পার্বত্য জাতি গুর্খারা পৃথ্বীনারায়ণের নেতৃত্বে নেপাল অধিকার করে। 1814 খ্রিস্টাব্দে লর্ড হেস্টিংস নেপালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। 1815 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সেনাপতি অক্টারলোনি গোর্খা নেতা অমর সিংহ থাপা কে পরাজিত করে মালাওনের দুর্গ দখল করেন। 1816 খ্রিস্টাব্দে দু'পক্ষের মধ্যে সগৌলির সন্ধি স্থাপিত হয়।
• প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধ (1824-1826 খ্রিস্টাব্দে) : 1824 খ্রিস্টাব্দে লর্ড আর্মহাস্ট, ব্রক্ষ্মরাজাকে প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে পরাস্ত করেন। 1826 খ্রিস্টাব্দে ব্রক্ষ্মরাজ ইয়ান্দাবুর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম’ যুদ্ধ (1852 খ্রিষ্টাব্দ) : 1852 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে লর্ড ডালহৌসি ব্রক্ষ্মরাজাকে পরাজিত করেন।
• তৃতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধ (1885-1886 খ্রিস্টাব্দ) : 1885 খ্রিস্টাব্দে লর্ড ডাফরিন ব্রক্ষ্মরাজ থিবো কে তৃতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে পরাস্ত করেন।
• ইঙ্গ-শিখ সম্পর্ক : গুরু গোবিন্দ সিংহের মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাব 12 টি মিসল বা দলে বিভক্ত ছিল। এই মিসল গুলির মধ্যে কোন ঐক্য ছিল না। সুকারচুকিয়া মিসলের অধিপতি মহা সিংহের পুত্র রঞ্জিত সিংহ অন্যান্য মিসল গুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে পাঞ্জাবের এক বৃহত্তর অংশে শিখ রাজ্য গড়ে তোলেন।
• রঞ্জিত সিংহ : 1792 খ্রিস্টাব্দে মাত্র 12 বছর বয়সে রঞ্জিত সিংহ পিতার মৃত্যুর পর সুকারচুকিয়া মিসলের অধিপতি হন। আফগানিস্তানে অধিপতি জামান শাহের ভারত আক্রমণ কালে রঞ্জিত সিংহ তাকে সাহায্য করেছিলেন, এজন্য 1799 খ্রিস্টাব্দে জামান শাহ তাকে রাজা উপাধি দেন এবং লাহোরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। রঞ্জিত সিংহ লাহোরে নিজের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। 1802 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ অমৃতসর জয় করেন। 1805 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শতদ্রু নদীর পশ্চিম তীরের সকল মিসল গুলি তিনি এক একে দখল করেন। 1809 খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল লর্ড মিন্টো প্রেরিত দূত চার্লস মেটকাফ এবং রণজিৎ সিংহের মধ্যে অমৃতসরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। সন্ধির শর্ত অনুযায়ী শতদ্রু পশ্চিম তীরে রণজিৎ সিংহের এবং পূর্বতীরে ইংরেজদের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। 1838 খ্রিষ্টাব্দের শাহ সুজা কে আফগানিস্তানের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইংরেজ, শাহ সুজা ও রণজিৎ সিংহের মধ্যে এক ত্রিশক্তি মিত্রতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্বেই 1839 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ সিংহের মৃত্যু হয়।
• প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ : রণজিৎ সিংহের মৃত্যুর পর লর্ড হার্ডিঞ্জ রঞ্জিতের স্ত্রী ঝিন্দনকে খালসা বাহিনী ভেঙে দিতে বললে শিখরা রাজি হননি। এজন্য ইংরেজ রেসিডেন্ট ব্রুকফুট রাজধানী লাহোরে অত্যাচার শুরু করেন। 1845 খ্রিস্টাব্দে 11 ডিসেম্বর ক্ষুব্ধ’ শিখ বাহিনী শতদ্রু অতিক্রম করে ব্রিটিশ রাজ্য আক্রমণ করলে প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ শুরু হয়। তেজ সিংহ ও লাল সিংহের বিশ্বাসঘাতকতায় শিখরা মুদকি, আলিওয়াল ও সেব্রাও এর যুদ্ধে পরাজিত হন এবং 1846 খ্রিস্টাব্দে লাহোরের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ : ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে চুনার দুর্গে রাজমাতা ঝিন্দনকে নির্বাসিত করা হলে শিখরা ক্ষুব্ধ হন। মুলতানের শাসনকর্তা মূল রাজ কে পদচ্যুত করে মানসিংহকে মুলতানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হলে মূলরাজ বিদ্রোহী হন। মূল রাজকে দমনের জন্য শের সিংহ কে পেরিত করলে, তিনিও বিদ্রোহী দলে যোগদান করেন। হাজারার শাসনকর্তা ছত্তর সিংহ এ সময় বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এইসব ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে 1848 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ যুদ্ধের সূচনা হয়। ইংরেজ সেনাপতি হিউগাফের হাতে শিখ সেনাপতি শের সিং ও ছত্তর সিংহের পরাজয় ঘটে। 1849 খ্রিস্টাব্দে চিলিনওয়ালার যুদ্ধে শিখরা জয়যুক্ত হলেও, গুজরাটের যুদ্ধে তাঁরা সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়। পাঞ্জাব ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। হেনরি লরেন্স পাঞ্জাবের শাসক মনোনীত হন।
• আফগানিস্তান :
• প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : 1838 খ্রিস্টাব্দে ভারতের বড়লাট লর্ড অকল্যান্ড আফগানিস্তানের আমির দোস্ত মোহাম্মদের কাছে আলেকজান্ডার বার্নেস নামে এক দূত প্রেরণ করলে তিনি তার মিত্রতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। 1809 খ্রিস্টাব্দে অকল্যান্ড গদিচ্যুত আফগানিস্তানের আমির শাহ সুজা কে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেন। 1838 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ, শাহ সুজা ও ইংরেজদের মধ্যে এক ত্রিশক্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। 1839 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ ও ইংরেজদের সম্মিলিত বাহিনী আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ শুরু করে। দোস্ত মোহাম্মদ এই যুদ্ধে পরাজিত হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : বড়লাট লিটন আফগানিস্তানের তৎকালীন আমির শের আলীর কাছে মিত্রতার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে শের আলী রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেন। এই সংবাদে লর্ড লিটন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং 1878 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। পরাজিত শের আলী রাশিয়ায় পলায়ন করেন এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়। ইংরেজরা তার পুত্র ইয়াকুব খাঁ কে আফগানিস্তানের সিংহাসনে বসান এবং 1879 খ্রিস্টাব্দে তাঁর সঙ্গে গন্ডামাকের সন্ধি স্বাক্ষর করেন।
• তৃতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : বিদ্রোহী আফগানরা ব্রিটিশ রেসিডেন্ট ক্যাভাগনরি ও তার দেহরক্ষী কে হত্যা করে ইয়াকুব খাঁকে সিংহাসনচ্যুত করেন এবং শের আলীর ভাতুষ্পুত্র আবদার রহমান কে সিংহাসনে বসান। আবদার রহমানের মৃত্যুর পর তার পুত্র হাবিবুল্লাহ এবং হাবিবুল্লাহর মৃত্যুর পর তার পুত্র আমানুল্লাহ আমির হন। 1919 খ্রিস্টাব্দে আমানুল্লাহ ব্রিটিশ বিরোধী গোষ্ঠির উৎসাহে তৃতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ শুরু করেন। 1919 খ্রিস্টাব্দে রাওয়ালপিন্ডির সন্ধি দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।
• তিব্বত : তিব্বত চীন এর অধীনস্থ হলেও প্রকৃতপক্ষে একটি স্বাধীন ধর্মতন্ত্র ছিল। দলাই লামা নামে একজন ধর্মগুরু দেশ শাসন করতেন। ওয়ারেন হেস্টিংস 1774 খ্রিস্টাব্দে বোগলে নামে জনৈক দুতকে বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের আশায় তিব্বতে পাঠান। এই ধৌত সফল হয়নি। 1887 খ্রিস্টাব্দে তিব্বত সিকিম আক্রমণ করলে ইংরেজ সেনাদল তা প্রতিহত করে। 1890 খ্রিস্টাব্দে চীন ও ভারত সরকারের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে সিকিম ও তিব্বতের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। 1893 খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে তিব্বত সিকিম সীমান্তে ইংরেজরা একটি বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপনের অধিকার পায়। লর্ড কার্জনের শাসনকালে দলাই লামা দোর্জিয়েফ নামে জনৈক রুশ প্রজার প্রভাবাধীন হয়ে পড়েন। গুজব রটে যে, দোর্জিয়েফের নেতৃত্বে তিনবার রাশিয়ায় তিব্বতী প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। ইংরেজরা রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে একটি সামরিক কমিশন পাঠাবার জন্য ইংল্যান্ডের কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিতে থাকেন। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা একটি ক্ষুদ্র প্রতিনিধিদলকে তিব্বত সীমান্ত অঞ্চল খাম্বাজং – এ দালাই লামার সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠাবার অনুমতি দেয়। কার্জন এই নির্দেশ উপেক্ষা করে 1904 খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে কর্ণেল ইয়ং হাসব্যান্ড এর নেতৃত্বে রাজধানী লাসায় একটি সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেন। তিব্বতীরা বাধা দিলে পরাজিত হয় এবং দলাই লামা প্রাণভয়ে চিনে পালিয়ে যান। 1904 খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে উভয় পক্ষে লাসা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গিয়াংসি, গার্টক ও ইয়াটুঙ্গে তিনটি ব্রিটিশ বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়। 1907 খ্রিস্টাব্দে ইঙ্গ-রুশ সন্ধি দ্বারা ইংল্যান্ড ও রাশিয়া উভয়ই তিব্বতের নিরপেক্ষতা মেনে নেয়।
• প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধ (1824-1826 খ্রিস্টাব্দে) : 1824 খ্রিস্টাব্দে লর্ড আর্মহাস্ট, ব্রক্ষ্মরাজাকে প্রথম ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে পরাস্ত করেন। 1826 খ্রিস্টাব্দে ব্রক্ষ্মরাজ ইয়ান্দাবুর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম’ যুদ্ধ (1852 খ্রিষ্টাব্দ) : 1852 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে লর্ড ডালহৌসি ব্রক্ষ্মরাজাকে পরাজিত করেন।
• তৃতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধ (1885-1886 খ্রিস্টাব্দ) : 1885 খ্রিস্টাব্দে লর্ড ডাফরিন ব্রক্ষ্মরাজ থিবো কে তৃতীয় ইঙ্গ ব্রহ্ম' যুদ্ধে পরাস্ত করেন।
• ইঙ্গ-শিখ সম্পর্ক : গুরু গোবিন্দ সিংহের মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাব 12 টি মিসল বা দলে বিভক্ত ছিল। এই মিসল গুলির মধ্যে কোন ঐক্য ছিল না। সুকারচুকিয়া মিসলের অধিপতি মহা সিংহের পুত্র রঞ্জিত সিংহ অন্যান্য মিসল গুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে পাঞ্জাবের এক বৃহত্তর অংশে শিখ রাজ্য গড়ে তোলেন।
• রঞ্জিত সিংহ : 1792 খ্রিস্টাব্দে মাত্র 12 বছর বয়সে রঞ্জিত সিংহ পিতার মৃত্যুর পর সুকারচুকিয়া মিসলের অধিপতি হন। আফগানিস্তানে অধিপতি জামান শাহের ভারত আক্রমণ কালে রঞ্জিত সিংহ তাকে সাহায্য করেছিলেন, এজন্য 1799 খ্রিস্টাব্দে জামান শাহ তাকে রাজা উপাধি দেন এবং লাহোরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। রঞ্জিত সিংহ লাহোরে নিজের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। 1802 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ অমৃতসর জয় করেন। 1805 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শতদ্রু নদীর পশ্চিম তীরের সকল মিসল গুলি তিনি এক একে দখল করেন। 1809 খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল লর্ড মিন্টো প্রেরিত দূত চার্লস মেটকাফ এবং রণজিৎ সিংহের মধ্যে অমৃতসরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। সন্ধির শর্ত অনুযায়ী শতদ্রু পশ্চিম তীরে রণজিৎ সিংহের এবং পূর্বতীরে ইংরেজদের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। 1838 খ্রিষ্টাব্দের শাহ সুজা কে আফগানিস্তানের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে ইংরেজ, শাহ সুজা ও রণজিৎ সিংহের মধ্যে এক ত্রিশক্তি মিত্রতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্বেই 1839 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ সিংহের মৃত্যু হয়।
• প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ : রণজিৎ সিংহের মৃত্যুর পর লর্ড হার্ডিঞ্জ রঞ্জিতের স্ত্রী ঝিন্দনকে খালসা বাহিনী ভেঙে দিতে বললে শিখরা রাজি হননি। এজন্য ইংরেজ রেসিডেন্ট ব্রুকফুট রাজধানী লাহোরে অত্যাচার শুরু করেন। 1845 খ্রিস্টাব্দে 11 ডিসেম্বর ক্ষুব্ধ’ শিখ বাহিনী শতদ্রু অতিক্রম করে ব্রিটিশ রাজ্য আক্রমণ করলে প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ শুরু হয়। তেজ সিংহ ও লাল সিংহের বিশ্বাসঘাতকতায় শিখরা মুদকি, আলিওয়াল ও সেব্রাও এর যুদ্ধে পরাজিত হন এবং 1846 খ্রিস্টাব্দে লাহোরের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ : ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে চুনার দুর্গে রাজমাতা ঝিন্দনকে নির্বাসিত করা হলে শিখরা ক্ষুব্ধ হন। মুলতানের শাসনকর্তা মূল রাজ কে পদচ্যুত করে মানসিংহকে মুলতানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হলে মূলরাজ বিদ্রোহী হন। মূল রাজকে দমনের জন্য শের সিংহ কে পেরিত করলে, তিনিও বিদ্রোহী দলে যোগদান করেন। হাজারার শাসনকর্তা ছত্তর সিংহ এ সময় বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এইসব ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে 1848 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ যুদ্ধের সূচনা হয়। ইংরেজ সেনাপতি হিউগাফের হাতে শিখ সেনাপতি শের সিং ও ছত্তর সিংহের পরাজয় ঘটে। 1849 খ্রিস্টাব্দে চিলিনওয়ালার যুদ্ধে শিখরা জয়যুক্ত হলেও, গুজরাটের যুদ্ধে তাঁরা সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়। পাঞ্জাব ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। হেনরি লরেন্স পাঞ্জাবের শাসক মনোনীত হন।
• আফগানিস্তান :
• প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : 1838 খ্রিস্টাব্দে ভারতের বড়লাট লর্ড অকল্যান্ড আফগানিস্তানের আমির দোস্ত মোহাম্মদের কাছে আলেকজান্ডার বার্নেস নামে এক দূত প্রেরণ করলে তিনি তার মিত্রতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। 1809 খ্রিস্টাব্দে অকল্যান্ড গদিচ্যুত আফগানিস্তানের আমির শাহ সুজা কে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেন। 1838 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ, শাহ সুজা ও ইংরেজদের মধ্যে এক ত্রিশক্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। 1839 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জিত সিংহ ও ইংরেজদের সম্মিলিত বাহিনী আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ শুরু করে। দোস্ত মোহাম্মদ এই যুদ্ধে পরাজিত হন।
• দ্বিতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : বড়লাট লিটন আফগানিস্তানের তৎকালীন আমির শের আলীর কাছে মিত্রতার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে শের আলী রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেন। এই সংবাদে লর্ড লিটন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং 1878 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। পরাজিত শের আলী রাশিয়ায় পলায়ন করেন এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়। ইংরেজরা তার পুত্র ইয়াকুব খাঁ কে আফগানিস্তানের সিংহাসনে বসান এবং 1879 খ্রিস্টাব্দে তাঁর সঙ্গে গন্ডামাকের সন্ধি স্বাক্ষর করেন।
• তৃতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ : বিদ্রোহী আফগানরা ব্রিটিশ রেসিডেন্ট ক্যাভাগনরি ও তার দেহরক্ষী কে হত্যা করে ইয়াকুব খাঁকে সিংহাসনচ্যুত করেন এবং শের আলীর ভাতুষ্পুত্র আবদার রহমান কে সিংহাসনে বসান। আবদার রহমানের মৃত্যুর পর তার পুত্র হাবিবুল্লাহ এবং হাবিবুল্লাহর মৃত্যুর পর তার পুত্র আমানুল্লাহ আমির হন। 1919 খ্রিস্টাব্দে আমানুল্লাহ ব্রিটিশ বিরোধী গোষ্ঠির উৎসাহে তৃতীয় ইঙ্গ আফগান যুদ্ধ শুরু করেন। 1919 খ্রিস্টাব্দে রাওয়ালপিন্ডির সন্ধি দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।
• তিব্বত : তিব্বত চীন এর অধীনস্থ হলেও প্রকৃতপক্ষে একটি স্বাধীন ধর্মতন্ত্র ছিল। দলাই লামা নামে একজন ধর্মগুরু দেশ শাসন করতেন। ওয়ারেন হেস্টিংস 1774 খ্রিস্টাব্দে বোগলে নামে জনৈক দুতকে বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের আশায় তিব্বতে পাঠান। এই ধৌত সফল হয়নি। 1887 খ্রিস্টাব্দে তিব্বত সিকিম আক্রমণ করলে ইংরেজ সেনাদল তা প্রতিহত করে। 1890 খ্রিস্টাব্দে চীন ও ভারত সরকারের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে সিকিম ও তিব্বতের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। 1893 খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে তিব্বত সিকিম সীমান্তে ইংরেজরা একটি বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপনের অধিকার পায়। লর্ড কার্জনের শাসনকালে দলাই লামা দোর্জিয়েফ নামে জনৈক রুশ প্রজার প্রভাবাধীন হয়ে পড়েন। গুজব রটে যে, দোর্জিয়েফের নেতৃত্বে তিনবার রাশিয়ায় তিব্বতী প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। ইংরেজরা রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে একটি সামরিক কমিশন পাঠাবার জন্য ইংল্যান্ডের কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিতে থাকেন। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা একটি ক্ষুদ্র প্রতিনিধিদলকে তিব্বত সীমান্ত অঞ্চল খাম্বাজং – এ দালাই লামার সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠাবার অনুমতি দেয়। কার্জন এই নির্দেশ উপেক্ষা করে 1904 খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে কর্ণেল ইয়ং হাসব্যান্ড এর নেতৃত্বে রাজধানী লাসায় একটি সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেন। তিব্বতীরা বাধা দিলে পরাজিত হয় এবং দলাই লামা প্রাণভয়ে চিনে পালিয়ে যান। 1904 খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে উভয় পক্ষে লাসা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গিয়াংসি, গার্টক ও ইয়াটুঙ্গে তিনটি ব্রিটিশ বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়। 1907 খ্রিস্টাব্দে ইঙ্গ-রুশ সন্ধি দ্বারা ইংল্যান্ড ও রাশিয়া উভয়ই তিব্বতের নিরপেক্ষতা মেনে নেয়।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.