•স্থানীয় বায়ু : কোন কোন উষ্ণ মরুভূমি অথবা উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত ভাবে একরকম বায়ু প্রবাহিত হতে দেখা যায়, এই বায়ুপ্রবাহকে "স্থানীয় বায়ু প্রবাহ" বা "local winds" বলে।
•সাহারা মরুভূমি থেকে প্রবাহিত বিভিন্ন উষ্ণ বায়ু প্রবাহ : সাহারা মরুভূমি থেকে একরকম উষ্ণ মরু বায়ু প্রবাহিত হয়, যাকে স্পেনে সোলোনো, সিসিলি ও দক্ষিণ ইটালিতে সিরিক্কো, মিশরে খামসিন এবং গিনি উপকূলে হারমাট্টান বলে।
•আল্পস পর্বত থেকে প্রবাহিত বায়ু সমূহ :
•মিস্ট্রাল : শীতকালে ইউরোপের আল্পস পর্বত থেকে দক্ষিণ ফ্রান্সের রোন উপত্যকার দিকে মিস্ট্রাল নামে শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবল গতিতে প্রবাহিত হয়।
•বোরো : শীতকালে আল্পস পর্বত থেকে দক্ষিণ ইতালির অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলের দিকে বোরো নামের শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়।
•ফন : শীতকালে ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চল থেকে রাইন নদীর উপত্যকার দিকে ফন নামের উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়।
•কালবৈশাখী : গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসে বিকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও তার আশপাশে এবং বাংলাদেশে মাঝে মাঝেই বজ্রবিদ্যুৎ ও বৃষ্টিপাতের সঙ্গে এক ভীষণ ঝড় ওঠে। এই ঝড় কালবৈশাখী নামে পরিচিত। স্থানীয়ভাবে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হলে সেই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবল বেগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং উত্তরের শীতল বায়ু এই দুই বিপরীতধর্মী বায়ু ছুটে আসে। ফলে বায়ুপ্রবাহের সংঘর্ষের ফলে যে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়, তাই কালবৈশাখীর কারণ। ছোটনাগপুর মালভূমি তে কালবৈশাখী ঝড় উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এজন্য ইংরাজিতে কালবৈশাখী কে 'নর্থওয়েস্টার' বলে।
•লু : গ্রীষ্মকালে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে ভারতের উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার প্রভৃতি অঞ্চলে শো শো শব্দ করে যে উত্তপ্ত বায়ু প্রচণ্ড বেগে প্রবাহিত হয় তাকে লু বলে।
•আঁধি : উত্তর-পশ্চিম ভারতের দিল্লি পাঞ্জাব রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের কিছু অঞ্চলে গ্রীষ্মকালের বিকাল বেলায় কখনো কখনো এক রকমের ধুলোর ঝড় প্রবাহিত হতে থাকে যাকে আঁধি বলে। আঁধির বেগ প্রতি ঘন্টায় 70 থেকে 100 কিলোমিটার পর্যন্ত হয়।
•চিনুক : বসন্তকালে উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চল থেকে প্রেইরি অঞ্চলের দিকে চিনুক নামের উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে। চিনুক এর প্রভাবে প্রেইরি অঞ্চলের উষ্ণতা প্রায় 15° থেকে 20° সেলসিয়াস বেড়ে যায়। ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জমা বরফ গলে যায়। এজন্য রেড ইন্ডিয়ানরা এই বায়ুকে "স্নো ইটার" বা "তুষার ভক্ষক" বলে।
•টাকু : শীতকালে সুমেরু অঞ্চল থেকে উত্তর আমেরিকার উত্তর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত আলাস্কা উপদ্বীপের উপর দিয়ে টাকু নামের অতি শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়।
•পম্পেরো : বসন্তকালে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের আন্দিজ পর্বতের পাদদেশ থেকে আর্জেন্টিনার পম্পাস তৃণভূমি অঞ্চলের দিকে পম্পেরো নামের উষ্ণ বায়ু প্রবাহিত হয়।
•বার্গ : দক্ষিণ আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমি থেকে বার্গ নামের উষ্ণ বায়ু নিকটবর্তী দেশগুলোতে প্রবাহিত হয়।
•কারাবুনান : মধ্য এশিয়ার তুরান অঞ্চলে কারাবুনান নামের বায়ু প্রবাহিত হয়।
•সান্তাআনা : উত্তর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে সান্তাআনা নামের উষ্ণ বায়ু প্রবাহিত হয়।
•পুনাস : আন্দিজ পর্বতের পশ্চিম দিকে পুনাস নামের শুষ্ক, শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়।
•ব্রিকফিল্ডার : অস্ট্রেলিয়ার উষ্ণ বায়ু।
•পুর্গা : রাশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলে প্রবাহিত শীতল বায়ু প্রবাহ।
•লেভান্টার : স্পেনে প্রবাহিত শীতল বায়ু।
•নরওয়েস্টার : নিউজিল্যান্ডে প্রবাহিত উষ্ণ বায়ু।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.