• 563 খ্রি: পূ: (মতান্তরে 566 খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ) এক বৈশাখী পূর্ণিমার দিন নেপালের কপিলাবস্তু রাজ্যের লুম্বিনী নামক স্থানে গৌতম বুদ্ধ বা সিদ্ধার্থ জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতা ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা শুদ্ধধন। তার মাতা মায়াদেবী তার জন্মের 7 দিন পর মারা যান । তিনি বিমাতা গৌতমির কাছে বড় হন। 16 বছর বয়সে তিনি যশোধরা বা গোপাকে বিয়ে করেন । তিনি 13 বছর সংসার জীবন যাপন করেন। তার পুত্রের নাম রাহুল।
• একজন বৃদ্ধ মানুষ, একজন অসুস্থ মানুষ, একটি মৃতদেহ এবং একজন সন্যাসীকে দেখে তিনি সংসার ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। 29 বছর বয়সে তার সারথী ছন্ন কে সাথেনিয়ে সত্যের সন্ধানে গৃহত্যাগ করেন। এই ঘটনা 'মহাভিনিষ্ক্রমন' নামে পরিচিত। তার প্রিয় ঘোড়া ছিল কন্থক ।
• তিনি গয়ার কাছে উরু বিল্ব নামক স্থানে প্রথম তপস্যায় বসেন। তপস্যার পর নৈরঞ্জনা নদীতে স্নান করেন এবং সুজাতা নামক কৃষক কন্যার কাছে পায়েসান্ন গ্রহণ করেন।
• 35 বছর বয়সে মগধের গয়ায় এক অশ্বত্থ গাছের তলায় তিনি 'বোধিজ্ঞান' লাভ করেন । তখন থেকে তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিত হন।
• বোধিজ্ঞান লাভের পর কাশীর নিকট ঋষি পত্তন বা সারণাথ নামক স্থানে মৃগদাব উপবনে পঞ্চভিক্ষু নামে পরিচিত তার প্রথম 5 জন শিষ্যের কাছে তিনি সর্ব প্রথম ধর্মমত প্রচার করেন । এই ঘটনাকে ' ধর্মচক্র প্রবর্তন ' বলা হয়।
• 483 খ্রি: পূর্বাব্দে ( মতান্তরে 486 খ্রিস্টপূর্বাব্দে ) ৮০ বছর বয়েসে মল্ল রাজ্যের কুশীনগরে তিনি দেহ ত্যাগ করেন । বৌদ্ধরা এই ঘটনাকে ' মহা পরিনির্বান ' বলে থাকে।
• মানুষের দুঃখের কারণ অনুসন্ধান করে বুদ্ধ চারটি আর্য সত্যের কথা বলেন। এগুলি হল – 1) জগৎ দুঃখময়, 2) দুঃখ কষ্টের কারণ ও আছে (আকাঙ্ক্ষা), 3) এই দুঃখ নিবারণ করা সম্ভব(আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করে), 4) দুঃখ কষ্ট থেকে নিবৃত্তির পথ বা মার্গ আছে (অষ্টাঙ্গিক মার্গ)।
• নির্বাণ লাভের জন্য বুদ্ধ আটটি পথের কথা বলেছেন - সৎ - চিন্তা, সৎ - বাক্য, সৎ - কার্য, সৎ - সংকল্প, সৎ - জীবন, সৎ - চেষ্টা, সৎ - দৃষ্টি ও সৎ - সমাধি, এগুলি 'অষ্টাঙ্গিকমার্গ' নামে পরিচিত।
• গৌতম বুদ্ধের প্রয়ানের পর খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতকে কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতিতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় - মহাযান ও হীনযান। হীনযান বাদীরা মূল বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন এবং কোনরূপ বুদ্ধের মূর্তি পূজা করত না । অপরদিকে মহাযান বাদীরা বুদ্ধের মুর্তি পূজা করত।
• বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল ত্রিপিটক। এটি তিন ভাগে বিভক্ত - বিনয় - পিটক ( বৌদ্ধ মঠ গুলির নিয়ম শৃঙ্খলা লিপিবদ্ধ আছে ), সূত্ত - পিটক ( বুদ্ধের ধর্মাপদেশ লিপিবদ্ধ আছে ) এবং অভিধর্ম - পিটক ( বৌদ্ধ ধর্মের আদর্শের দার্শনিক ব্যাখ্যা আছে ) ।
• জাতক হল বৌদ্ধ - ধর্ম - সাহিত্যের একটি বিশেষ গ্রন্থ, এতে গৌতম বুদ্ধের পূর্ব জন্মের কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে।
• অধিকাংশ বৌদ্ধ গ্রন্থ গুলি পালি ভাষায় রচিত।
• বৌদ্ধ গ্রন্থ মহাবংশ ও দ্বীপবংশ থেকে সিংহলের ইতিহাস জানা যায়।
• অশ্বঘোষের 'বুদ্ধচরিত',' সৌন্দরনন্দ', 'সূত্রালঙ্কার', 'সারিপুত্র প্রকরণ' ও 'বজ্রসূচি', বসুমিত্রের 'মহাভিভাষা শাস্ত্র', নাগার্জুনের 'মাধ্যমিক কারিকা' ও 'প্রজ্ঞাপারমিতা কারিকা' হল উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ গ্রন্থ ।
• ব্যাকট্রিয় গ্রিক রাজা মিনান্দার বা মিলিন্দ তার দীক্ষাগুরু নাগ সেন এর কাছে বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে যে মৌলিক জিজ্ঞাসা বা আলোচনা করেন সেগুলি নাগ সেন যে গ্রন্থে লিখেছেন সেই গ্রন্থের নাম 'মিলিন্দ পহ্ন' বা 'মিলিন্দ প্রশ্ন' ।
• প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি : 483 খ্রি: পূ: অজাতশত্রুর রাজত্বকালে রাজগীরে প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন মহাকাশ্যপ।
• দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি : 383 খ্রি: পূ: কালাশোক বা কাকবর্ণের রাজত্বকালে বৈশালীতে দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি আয়োজিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন সবাকামি ।
• তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি : 250 খ্রিঃ পূঃ অশোকের রাজত্বকালে পাটলিপূত্রে এই সম্মেলন আয়োজিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন মাগ্গলীপুত্ত ত্রিসা।
• চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি : 72 খ্রিষ্টাব্দে কনিষ্কের রাজত্ব কালে কাশ্মীরে এই সম্মেলন আয়োজিত হয়।এর সভাপতিত্ব করেন বসুমিত্র ও অশ্বঘোষ ।
কিছু বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের প্রতিষ্ঠাতা :
• গুপ্ত সম্রাট প্রথম কুমার গুপ্ত বিহারের বাদাগাওয়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
• পাল বংশীয় রাজা গোপাল বিহারের বিহার শরীফে ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
• পাল বংশীয় রাজা ধর্মপাল বিহারের ভাগলপুরে বিক্রমশিলা বিশ্ববিদ্যাল এবং উত্তরবঙ্গে সোমপুরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
যে সমস্ত রাজা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন :
• মগধ সম্রাট বিম্বিসার ও অজাতশত্রু, কোশলরাজ প্রসেনজিৎ, বৎস সম্রাট উদয়ী, মৌর্য সম্রাট অশোক ও দশরথ, ইন্দো গ্রিক রাজা মিলিন্দ বা মিনান্দার, কুষাণ সম্রাট কনিস্ক, হর্ষবর্ধন এবং পাল বংশীয় রাজা গোপাল, ধর্মপাল ও রামপাল ।
• একজন বৃদ্ধ মানুষ, একজন অসুস্থ মানুষ, একটি মৃতদেহ এবং একজন সন্যাসীকে দেখে তিনি সংসার ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। 29 বছর বয়সে তার সারথী ছন্ন কে সাথেনিয়ে সত্যের সন্ধানে গৃহত্যাগ করেন। এই ঘটনা 'মহাভিনিষ্ক্রমন' নামে পরিচিত। তার প্রিয় ঘোড়া ছিল কন্থক ।
• তিনি গয়ার কাছে উরু বিল্ব নামক স্থানে প্রথম তপস্যায় বসেন। তপস্যার পর নৈরঞ্জনা নদীতে স্নান করেন এবং সুজাতা নামক কৃষক কন্যার কাছে পায়েসান্ন গ্রহণ করেন।
• 35 বছর বয়সে মগধের গয়ায় এক অশ্বত্থ গাছের তলায় তিনি 'বোধিজ্ঞান' লাভ করেন । তখন থেকে তিনি গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিত হন।
• বোধিজ্ঞান লাভের পর কাশীর নিকট ঋষি পত্তন বা সারণাথ নামক স্থানে মৃগদাব উপবনে পঞ্চভিক্ষু নামে পরিচিত তার প্রথম 5 জন শিষ্যের কাছে তিনি সর্ব প্রথম ধর্মমত প্রচার করেন । এই ঘটনাকে ' ধর্মচক্র প্রবর্তন ' বলা হয়।
• 483 খ্রি: পূর্বাব্দে ( মতান্তরে 486 খ্রিস্টপূর্বাব্দে ) ৮০ বছর বয়েসে মল্ল রাজ্যের কুশীনগরে তিনি দেহ ত্যাগ করেন । বৌদ্ধরা এই ঘটনাকে ' মহা পরিনির্বান ' বলে থাকে।
• মানুষের দুঃখের কারণ অনুসন্ধান করে বুদ্ধ চারটি আর্য সত্যের কথা বলেন। এগুলি হল – 1) জগৎ দুঃখময়, 2) দুঃখ কষ্টের কারণ ও আছে (আকাঙ্ক্ষা), 3) এই দুঃখ নিবারণ করা সম্ভব(আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করে), 4) দুঃখ কষ্ট থেকে নিবৃত্তির পথ বা মার্গ আছে (অষ্টাঙ্গিক মার্গ)।
• নির্বাণ লাভের জন্য বুদ্ধ আটটি পথের কথা বলেছেন - সৎ - চিন্তা, সৎ - বাক্য, সৎ - কার্য, সৎ - সংকল্প, সৎ - জীবন, সৎ - চেষ্টা, সৎ - দৃষ্টি ও সৎ - সমাধি, এগুলি 'অষ্টাঙ্গিকমার্গ' নামে পরিচিত।
• গৌতম বুদ্ধের প্রয়ানের পর খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতকে কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতিতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় - মহাযান ও হীনযান। হীনযান বাদীরা মূল বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন এবং কোনরূপ বুদ্ধের মূর্তি পূজা করত না । অপরদিকে মহাযান বাদীরা বুদ্ধের মুর্তি পূজা করত।
• বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল ত্রিপিটক। এটি তিন ভাগে বিভক্ত - বিনয় - পিটক ( বৌদ্ধ মঠ গুলির নিয়ম শৃঙ্খলা লিপিবদ্ধ আছে ), সূত্ত - পিটক ( বুদ্ধের ধর্মাপদেশ লিপিবদ্ধ আছে ) এবং অভিধর্ম - পিটক ( বৌদ্ধ ধর্মের আদর্শের দার্শনিক ব্যাখ্যা আছে ) ।
• জাতক হল বৌদ্ধ - ধর্ম - সাহিত্যের একটি বিশেষ গ্রন্থ, এতে গৌতম বুদ্ধের পূর্ব জন্মের কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে।
• অধিকাংশ বৌদ্ধ গ্রন্থ গুলি পালি ভাষায় রচিত।
• বৌদ্ধ গ্রন্থ মহাবংশ ও দ্বীপবংশ থেকে সিংহলের ইতিহাস জানা যায়।
• অশ্বঘোষের 'বুদ্ধচরিত',' সৌন্দরনন্দ', 'সূত্রালঙ্কার', 'সারিপুত্র প্রকরণ' ও 'বজ্রসূচি', বসুমিত্রের 'মহাভিভাষা শাস্ত্র', নাগার্জুনের 'মাধ্যমিক কারিকা' ও 'প্রজ্ঞাপারমিতা কারিকা' হল উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ গ্রন্থ ।
• ব্যাকট্রিয় গ্রিক রাজা মিনান্দার বা মিলিন্দ তার দীক্ষাগুরু নাগ সেন এর কাছে বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে যে মৌলিক জিজ্ঞাসা বা আলোচনা করেন সেগুলি নাগ সেন যে গ্রন্থে লিখেছেন সেই গ্রন্থের নাম 'মিলিন্দ পহ্ন' বা 'মিলিন্দ প্রশ্ন' ।
• প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি : 483 খ্রি: পূ: অজাতশত্রুর রাজত্বকালে রাজগীরে প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন মহাকাশ্যপ।
• দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি : 383 খ্রি: পূ: কালাশোক বা কাকবর্ণের রাজত্বকালে বৈশালীতে দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি আয়োজিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন সবাকামি ।
• তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি : 250 খ্রিঃ পূঃ অশোকের রাজত্বকালে পাটলিপূত্রে এই সম্মেলন আয়োজিত হয়। এর সভাপতিত্ব করেন মাগ্গলীপুত্ত ত্রিসা।
• চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি : 72 খ্রিষ্টাব্দে কনিষ্কের রাজত্ব কালে কাশ্মীরে এই সম্মেলন আয়োজিত হয়।এর সভাপতিত্ব করেন বসুমিত্র ও অশ্বঘোষ ।
কিছু বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের প্রতিষ্ঠাতা :
• গুপ্ত সম্রাট প্রথম কুমার গুপ্ত বিহারের বাদাগাওয়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ।
• পাল বংশীয় রাজা গোপাল বিহারের বিহার শরীফে ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
• পাল বংশীয় রাজা ধর্মপাল বিহারের ভাগলপুরে বিক্রমশিলা বিশ্ববিদ্যাল এবং উত্তরবঙ্গে সোমপুরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
যে সমস্ত রাজা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন :
• মগধ সম্রাট বিম্বিসার ও অজাতশত্রু, কোশলরাজ প্রসেনজিৎ, বৎস সম্রাট উদয়ী, মৌর্য সম্রাট অশোক ও দশরথ, ইন্দো গ্রিক রাজা মিলিন্দ বা মিনান্দার, কুষাণ সম্রাট কনিস্ক, হর্ষবর্ধন এবং পাল বংশীয় রাজা গোপাল, ধর্মপাল ও রামপাল ।
No comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.